Skin Diseases

ত্বকের রোগ, অথবা চর্মরোগ, ত্বককে আক্রমণ করতে পারে এমন বিভিন্ন অসুস্থতা বা অসুস্থতার সমষ্টি যা ত্বক বা ত্বকের সাথে সংঘটিত হয়। ত্বক মানুষের সবচেয়ে বড় অঙ্গ হিসেবে কাজ করে এবং এটি বাইরের পরিবেশের বিরুদ্ধে একটি প্রতিরক্ষামূলক ব্যারিয়ার হিসেবে কাজ করে। নিচে কিছু সাধারিত ত্বক রোগের ধরণ উল্লেখ করা হলো:

  1. Acne:  Acne বা ব্রন হল মানব ত্বকের একটি দীর্ঘমেয়াদী রোগবিশেষ যা বিশেষত লালচে ত্বক, প্যাপ্যুল, নডিউল, পিম্পল, তৈলাক্ত ত্বক, ক্ষতচিহ্ন বা কাটা দাগ ইত্যাদি দেখে চিহ্নিত করা যায়।
  2. Eczema (Dermatitis): Eczema হল ত্বকের এমন একটি অবস্থা যার কারণে ত্বক লাল, শুষ্ক, হয় যায় এবং চুলকানির মতন সমস্যা সৃষ্টি হয়।Eczema সাধারণত শিশুদের মধ্যে দেখা যায় তবে যে এটি কোনো বয়সে হতে পারে। এটি একটি দীর্ঘস্থায়ী (দীর্ঘমেয়াদী) অবস্থা যা পর্যায়ক্রমে জ্বলতে থাকে।Eczema ত্বকের বাধা ফাংশনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে যার ফলে ত্বক আরও সংবেদনশীল হয়ে ওঠে এবং শুষ্কতা এবং সংক্রমণের ঝুঁকিতে পড়ে।
  3. Psoriasis: Psoriasis হল এক ধরনের চর্মরোগ। যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে তাঁদের মূলত এই রোগটি হয়ে থাকে। Psoriasis হলে ত্বকে লাল লাল ছোপ পড়ে যায়, চামড়া শুকিয়ে সাদা হয়ে যায়। যাঁদের এই রোগটি হয় তাঁদের অধিকাংশের মাথাতে এই সমস্যা দেখা গিয়েছে।
  4. Dermatitis: Dermatitis হল এক ধরনের সাধারণ চর্মরোগ, যা সাধারণত মাথার ত্বককে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এই রোগের কারণে আক্রান্ত স্থান লাল এবং খসখসে হয়ে যায় ও খুশকি দেখা দেয়। মুখমণ্ডল, বুকের উপরের অংশ এবং পিঠের মতো শরীরের তৈলাক্ত অংশকেও এই রোগ আক্রান্ত করতে পারে।
  5. Rosacea: Rosacea  হল এক ধরনের ত্বকের রোগ যা সাধারণণত ত্বকের চামড়াকে প্রভাবিত করে। মুখকে স্থায়ীভাবে লাল করার জন্য ক্যাপিলারিগুলি (সূক্ষম নল) বড় হয়। অনুরূপভাবে, কপাল, গাল এবং থুতনিতে ব্রণর মতো হলুদ রঙের পিন্পেল বা ফুস্কুড়ি দেখা যায়। অনেক সময় একে ব্রণর সাথে গুলিয়ে ফেলা হতে পারে; যদিও, এটা উল্লেখ করা জরুরী যে ব্রণর মতো রোজাসিয়ার জন্য মুখে কোনও দাগ হয় না।
    সাধারণত 30-50 বছুর বয়সী মহিলাদের মধ্যে এই অবস্থাটি হয়ে থাকে, যার কারণে মুখ লাল হয়ে যায়। অবস্থার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে মুখের লালভাব বৃদ্ধি পেতে থাকে যেহেতু ক্যাপিলারিগুলি বড় হয়। পুরুষদের ক্ষেত্রে, এর ফলে নাকও লাল হয়ে যায়।
  6. Hives (Urticaria):Hives (Urticaria) যাকে Urticaria ও বলা হয়, সেটি হল একটি ত্বকের সমস্যা যেখানে লালচে রঙের ফোস্কা বা ফোলা অংশ ত্বকের উপরে দেখা যায়, অনেকটা ব্রণর মতো। সাধারণত এটা আলার্জি ঘটিত কারণে হয়, Hives অনেক রকম আকারের হয় এবং কয়েকদিন পর্যন্ত থাকতে পারে অথবা নিজে থেকেই সেরে যায়। গুরুতর প্রকারের হাইভস 6 সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে সেরে যায়। বেশীরভাগ হাইভসই কিছু দিনের মধ্যে সেরে যায়। যদিও, দীর্ঘস্থায়ী হাইভস 6 সপ্তাহের বেশি সময় ধরে থাকতে পারে যদি চিকিৎসা না করানো হয়।
  7. Vitiligo: Vitiligo হল এমন একটি রোগ যার কারণে ত্বকের বর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। বিবর্ণ অঞ্চলটি সাধারণত সময়ের সাথে সাথে বড় হতে থাকে। এই সাদা সাদা দাগ বা ছোপ হওয়া শরীরের যে কোনো অংশের ত্বকের উপর থেকেই শুরু হতে পারে। চুল, ভ্রু এমনকি মুখের ভিতরেও এটা হতে পারে।
  8. Ringworm (Dermatophytosis): Ringworm বা দাদ খুবই সাধারণ এবং অতি পরিচিত একটি Fungal Infection বা সংক্রমণ। শরীরের বিভিন্ন স্থানে যেমন, হাত, পা, পিঠ, পায়ের আঙ্গুল, হাতের আঙ্গুল এবং মাথার তালুতেও দাদ হতে দেখা যায়। এটি খুবই সংক্রামক এবং খুব সহজেই একজন থেকে অন্য জনের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।
  9. Impetigo: Impetigo হল একধরণের সাধারণভাবে পরিলক্ষিত ত্বকের রোগ যার দ্বার়া শিশুরা আক্রান্ত হয়; এই রোগে ত্বকে ঘা বা ক্ষত সৃষ্টি হয় যার ফলে চুলকানি সৃষ্টি হয় এ এটি ভীষণ ভাবে সংক্রামক। যেহেতু এটি শিশুদেরইই বেশি হয়, তাই এটি’স্কুল বলেও পরিচিত। এটি একটি ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ যা সাধারণত উপরের ত্বকবে আক্রান্ত করে এবং 7 থেকে 10 দিনের মধ্যে নিজে থেকেই সেরে যায়।
  10. Melanoma: Melanoma হল ত্বকের ক্যান্সার বা স্কিন ক্যান্সার। ত্বকে অস্বাভাবিক কোমের বৃদ্ধির ফলে এই সমস্যা দেখা দেয়, যা ক্রমে সমগ্র শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। স্কিন ক্যান্সার সবথেকে সহজে নিরাময়যোগ্য ক্যান্সার যদি সেটি সময়মত ধরা পড়ে।
  11. Lupus Erythematosus: Lupus Erythematosus একটি Autoimmune রোগ যেটি দেখা যায় যখন কোন ব্যাক্তির দেহের সুস্থ কোষ ও টিস্যু বা শরীরকলা আক্রান্ত হয় ব্যাক্তির নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ পদ্ধতির দ্বারা,এর কারণে হৃদযন্ত্র, ফুসফুস, ত্বক, হাড়ের সন্ধি, কিডনি, রক্তবাহী শিরা-উপশিরা, এবং মস্তিষ্কের মতো শারীরিক বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষতি হয়।
  12. Cellulitis: Cellulitis  হল একটি ত্বকের এমন অবস্থা বা রোগ যেটি প্রাথমিকভাবে শরীরের নীচের অংশে প্রভাব ফেলে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে, এটি মুখ বা হাতগুলিকেও প্রভাবিত করতে পারে। ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কারণে এতে ত্বককে লাল দেখায় এবং ফুলিয়ে দেয় এবং স্পর্শে অত্যন্ত সংবেদনশীলতা অনুভূত হয়। সেলুলাইটিস সংক্রামক নয় এবং সহজেই এটিকে আয়ত্তে আনা যেতে পারে। কিন্তু, চিকিৎসা না করা হলে এটি গুরুতর হতে পারে, কারণ সংক্রমণটি লিন্ফ নোডের মাধ্যেমে রক্ত প্রবাহের মধ্যে দিয়ে ছড়িয়ে পড়ে।

সঠিক নির্ণয় এবং যথায়থ চিকিৎসা প্রদানের জন্য চিকিৎসা প্রদানকারী হিসেবে স্বাস্থ্য পেশাদারের সাথে যোগাযোগ করা উচিত। তবে এক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা ভীষন ফলদায়ক ও দীর্ঘমেয়াদী সুরাহা দেয়।